ইরানের গণমাধ্যম নিশ্চিত করেছে যে দেশটির একজন আরেকজন শীর্ষ পরমাণু বিজ্ঞানী নিহত হয়েছেন, যার ফলে সাম্প্রতিক সময়ে নিহত ইরানি পরমাণু বিজ্ঞানীদের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১০ জনে। ইসরায়েলের ‘অপারেশন নার্নিয়া’ অভিযানে এ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে বলে ইসরায়েলি সূত্র দাবি করছে।
নিহত বিজ্ঞানীর নাম ইসার তাবাতাবেই ঘোমশেহ। তিনি তেহরানের শরীফ প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র ছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিউজলেটারে তাঁর মৃত্যুর খবর প্রথম প্রকাশ করা হয়। সেখানে বলা হয়, ঘোমশেহকে তাঁর নিজ বাসায় হত্যা করা হয়, যেখানে তাঁর স্ত্রী মানসুরেহ হাজিসালেমও উপস্থিত ছিলেন।
এ নিয়ে ইরান সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে ১০ জন পরমাণু বিজ্ঞানীর মৃত্যুর কথা স্বীকার করলো। নিহতদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন ফেরেদুন আব্বাসি, যিনি ইরানের পরমাণু শক্তি সংস্থার প্রাক্তন প্রধান ছিলেন, ও মোহাম্মদ মেহেদী তেহরানচি, যিনি ইসলামিক আজাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি ছিলেন।
এছাড়া শহীদ বেহেশতি বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক একাডেমিক, যেমন আব্দুলহামিদ মিনুচেহর, আহমেদ রেজা জোলফাগারি ও আমিরহোসেন ফেঘি, এবং গবেষক আকবর মোতালেবিজাদেহ, আলী বাকি করিমি, মনসুর আসগারি ও সাইদ বোরজিও নিহত হয়েছেন।
ইসরায়েলের চ্যানেল ১২ জানিয়েছে, ‘অপারেশন নার্নিয়া’ নামক গোপন অভিযানে নয়জন বিজ্ঞানীকে একযোগে হত্যা করা হয়। এরপর একই ধারাবাহিকতায় ঘোমশেহকে টার্গেট করা হয় বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ইরান এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে ইসরায়েলকে এই হত্যাকাণ্ডের জন্য দায়ী করেনি, তবে দেশটির প্রতিরক্ষা ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো ব্যাপক তদন্তে নেমেছে। নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই হত্যাকাণ্ডগুলো ইরানের পরমাণু কর্মসূচিতে বড় ধরনের চাপ সৃষ্টি করতে পারে।
আঞ্চলিক উত্তেজনা আরও বাড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, মধ্যপ্রাচ্যে গোপন সাইবার ও গোয়েন্দা যুদ্ধ এখন আর ছায়াযুদ্ধের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই—তা রক্তক্ষয়ী বাস্তবতায় রূপ নিচ্ছে।