সিলেটের কোম্পানীগঞ্জে অবৈধ পাথর উত্তোলন ও ব্যবসা রুখতে আবারও কঠোর অবস্থানে গেছে প্রশাসন। আজ সোমবার (৩০ জুন) সকাল ১১টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত পূর্ব ইসলামপুর ইউনিয়নের কলাবাড়ি ধলাই ব্রিজের দুই পাশে পরিচালিত এক অভিযানে ধ্বংস করা হয়েছে ১৭টি পাথর ভাঙার যন্ত্র (ক্রাশার মেশিন)। এ সময় জব্দ করা হয় প্রায় ১ লাখ ৪০ হাজার ঘনফুট পাথর এবং ১০টি বিদ্যুৎ সংযোগের মিটার।
জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হাছিবুর রহমানের নেতৃত্বে এই অভিযান চালানো হয়। অভিযানে সহায়তা করেন র্যাব, পুলিশ, বিজিবি, আনসার সদস্য ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা।
অভিযান চলাকালে তিনটি পাথর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানও গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, এসব ক্রাশার মেশিন দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে পাথর ভেঙে বাজারজাত করে আসছিল। প্রশাসনের একাধিক অভিযানের পরও মালিকরা কার্যক্রম বন্ধ করেননি।
এর আগে, পরিবেশ ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের দুই উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান ও মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান ১৪ জুন জাফলং এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে সিলেটের পাথর কোয়ারিগুলো আর ইজারা না দেওয়ার ঘোষণা দেন এবং অবৈধ যন্ত্রগুলোর বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার নির্দেশ দেন। এর প্রেক্ষিতেই ১৬ জুন থেকে সিলেটজুড়ে ধারাবাহিকভাবে অভিযান শুরু হয়।
এদিকে, কোয়ারি বন্ধ এবং ক্রাশার মেশিনের কার্যক্রম স্থগিত রাখায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন পাথর ব্যবসায়ী ও শ্রমিকেরা। ‘সিলেট জেলা পাথর-সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ’র ব্যানারে তারা তিন দিনব্যাপী গণ-অনশন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। আজ বিকেল ২টায় এ কর্মসূচির সমাপ্তি হয়।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে সরকার পাথর-বালু উত্তোলনে নিষেধাজ্ঞা জারি করলেও, স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের ছত্রছায়ায় তা অব্যাহত ছিল। সাম্প্রতিক সময়ে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর অন্য পক্ষের ছত্রছায়ায় এই কার্যক্রম আরও বেড়ে যায়।
স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পরিবেশ রক্ষায় এসব অবৈধ কার্যক্রম রোধে অভিযান অব্যাহত থাকবে। কোনো রাজনৈতিক চাপ বা আপসের জায়গা থাকবে না বলেও জানান তাঁরা।