আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবিতে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ধারাবাহিকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে বিক্ষোভ কর্মসূচি। বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার পর্যন্ত খুলনা, বরিশাল, রাজশাহী, সিলেট, রংপুর, কুমিল্লা ও আরও কয়েকটি জেলায় রাজপথে নেমেছে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক এবং ছাত্র সংগঠন।
খুলনায় ব্লকেড, স্লোগানে মুখর শিববাড়ী মোড়
আজ শুক্রবার বিকেল ৪টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত খুলনার শিববাড়ী মোড়ে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), ইসলামী আন্দোলন, রেড জুলাই ও ইসলামী ছাত্র ও যুব সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। বিক্ষোভকারীরা “আওয়ামী লীগের ঠিকানা, এই বাংলায় হবে না”সহ নানা স্লোগান দিয়ে রাজপথ উত্তপ্ত করে তোলে।
বরিশালে মহাসড়ক অবরোধ, ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম
শুক্রবার রাত ৮টা থেকে ৯টা পর্যন্ত বরিশালের নথুল্লাবাদ কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল এলাকায় ঢাকা-বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়ক অবরোধ করেন আন্দোলনকারীরা। ‘বরিশালের সর্বস্তরের ছাত্র আন্দোলন ও জনতা’ ব্যানারে আয়োজিত এই কর্মসূচিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা অংশ নেন। সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ৪৮ ঘণ্টার সময়সীমা দিয়ে সাময়িকভাবে অবরোধ প্রত্যাহার করা হয়।
কুমিল্লায় গভীর রাতে মহাসড়কে বিক্ষোভ
বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ৩টা থেকে ভোর পর্যন্ত কুমিল্লার পদুয়ার বাজার বিশ্বরোডে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এতে দীর্ঘ যানজটে ভোগান্তিতে পড়ে যাত্রীরা। শুক্রবার বিকেলেও কুমিল্লা নগরের পুবালি চত্বরে মিছিল-সমাবেশ করে এনসিপি, এবি পার্টি ও ছাত্র সংগঠনগুলো।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে টানা আন্দোলন
বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ শামসুজ্জোহা চত্বরে বিক্ষোভ করে একদল শিক্ষার্থী। শুক্রবার দুপুরে নগরের তালাইমারী এলাকায় ফের বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে হেফাজতে ইসলাম ও অন্যান্য সংগঠনের কর্মীরাও সংহতি প্রকাশ করেন।
সিলেটে লাগাতার কর্মসূচি
সিলেট জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে আজ বিকেলেও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের স্থানীয় নেতারা। গত রাতেও তাঁরা একই দাবিতে বিক্ষোভ করেন।
রংপুরেও সমমনা দলের অংশগ্রহণ
রংপুরে বেলা ২টার দিকে জেলা স্কুল থেকে মিছিল বের হয়ে সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভে রূপ নেয়। অংশ নেন এনসিপি, জামায়াতে ইসলামী, গণ অধিকার পরিষদ, যুবদল ও অন্যান্য সংগঠনের কর্মীরা।
দাবি ও বার্তা
সব জায়গায় একই দাবি—আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে। আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, এই দল দেশের রাজনীতি ও প্রশাসনে অগণতান্ত্রিক প্রভাব বিস্তার করে চলেছে। কয়েকটি সংগঠন সরকারের প্রতি ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছে, অন্যথায় বৃহত্তর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দিয়েছে।
সংশ্লিষ্ট প্রশাসন এখনো এসব কর্মসূচিকে শান্তিপূর্ণ বললেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।