হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর নির্যাতন বন্ধ এবং জাতীয় সংসদসহ সব পর্যায়ে প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে সংরক্ষিত আসন ও পৃথক নির্বাচন ব্যবস্থার পুনঃপ্রতিষ্ঠার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট। একই সঙ্গে মুরাদনগর কুমিল্লায় গণধর্ষণ, খিলক্ষেতে মন্দির ভাঙচুর, ভূমিদখল, হত্যাকাণ্ড, চাঁদাবাজি ও মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে সংগঠনটি।
বুধবার (৯ জুলাই) রাজবাড়ী প্রেসক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত মানববন্ধন ও সমাবেশে রাজবাড়ী জেলা শাখার নেতৃবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।
মানববন্ধনে বক্তৃতা করেন বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট, রাজবাড়ী জেলা শাখার সভাপতি অশোক শিকদার, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট বাসুদেব প্রামানিক, আইন বিষয়ক সম্পাদক হেমন্ত কুমার পাল, সাংগঠনিক সম্পাদক ইন্দ্রজিত কুমার দাস প্রমুখ।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, “সংসদে হিন্দু সম্প্রদায়ের কোনও প্রতিনিধি না থাকায় বারবার এই সম্প্রদায়ের মানুষ নিপীড়নের শিকার হচ্ছেন। জাতীয় নির্বাচনে সংখ্যালঘুদের জন্য পৃথক নির্বাচন ও সংরক্ষিত আসন নিশ্চিত না করা হলে ভবিষ্যতে হিন্দু সম্প্রদায় কোনও নির্বাচনেই অংশ নেবে না এবং ভোট বর্জন করবে।”
তাঁরা বলেন, “স্বৈরাচার পতনের পর আমরা আশা করেছিলাম, দেশে সব ধর্মাবলম্বীর সমান অধিকার থাকবে। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে উপদেষ্টা পরিষদ, সংস্কার কমিটি ও নিয়োগে হিন্দুদের কোনও অংশগ্রহণ নেই। বরং প্রতিদিনই দেশের কোথাও না কোথাও হিন্দুদের বাড়িঘর, মন্দির, প্রতিমা ধ্বংস, জমি দখল, হত্যা ও অপহরণের ঘটনা ঘটছে। নারী নির্যাতন, মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার এবং দেশত্যাগে বাধ্য করার হুমকিও থেমে নেই।”
তারা উদাহরণ দিয়ে বলেন, “যশোরে সম্প্রতি ১৮টি হিন্দু পরিবার ঘরবাড়ি, দোকান, আসবাবপত্রসহ সম্পূর্ণ ভস্মীভূত হয়েছে। লালমনিরহাটে ধর্ম অবমাননার অজুহাতে পরেশ চন্দ্র শীল ও বিষ্ণুপদ শীলের ওপর হামলা হয়েছে, মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তারও করা হয়েছে। এসব ঘটনায় আজ পর্যন্ত দোষীরা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি পায়নি।”
বক্তারা, “দেশের সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা ও রাজনৈতিক অধিকার নিশ্চিত করতে হলে শুধু কথায় হবে না সংবিধান অনুযায়ী সংসদে সরাসরি প্রতিনিধিত্ব এবং পৃথক ভোটের ব্যবস্থা পুনর্বহালের দাবি জানান তারা।”