ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর ও আখাউড়া উপজেলায় বজ্রপাতের পৃথক ঘটনায় পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। রবিবার (১০ মে) বিকেলে এই মর্মান্তিক ঘটনাগুলো ঘটে। এতে আরও অন্তত পাঁচজন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
নিহতরা হলেন—সরাইল উপজেলার কালিকচ্ছ গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক (৩৫), নাসিরনগরের গোকর্ণ গ্রামের শামসুল হুদা (৬৫), ভলাকুট ইউনিয়নের দুর্গাপুর গ্রামের জাকিয়া বেগম (৮), আখাউড়ার রুটি গ্রামের সেলিম শেখ (৬০) এবং বনগজ গ্রামের জমির খাঁ (২২)।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বিকেলে ধান কাটার কাজ চলাকালে হঠাৎ বজ্রপাত হলে বিভিন্ন এলাকায় এই হতাহতের ঘটনা ঘটে। সরাইলের মৌসুমী শ্রমিক আব্দুর রাজ্জাক নাসিরনগরের টেকানগর গ্রামে ধান কাটতে গিয়ে বজ্রপাতে মারা যান। একই সময় গোকর্ণ গ্রামের কৃষক শামসুল হুদা ফসলি জমিতে কাজ করার সময় প্রাণ হারান।
ভলাকুট ইউনিয়নের দুর্গাপুর গ্রামে চাচার বাড়িতে বেড়াতে এসে ধান শুকাতে মাঠে গেলে বজ্রপাতে মারা যায় শিশু জাকিয়া বেগম। তার সঙ্গে থাকা হামিদা বেগম (৫০) অজ্ঞান হয়ে পড়েন এবং গলায় গুরুতর দগদগে ক্ষতের কারণে তাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এছাড়া আহত বাকি ব্যক্তিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
আখাউড়ায় পৃথক দুটি ঘটনায় প্রাণ হারান জমির খাঁ ও সেলিম শেখ। জমির ধান কাটার মেশিন নিয়ে মাঠে যাচ্ছিলেন, আর সেলিম শেখ নিজ জমিতে কাজ করছিলেন বজ্রপাতের সময়। সেলিম শেখের ছেলে রুবেল শেখ জানান, “বাবা প্রতিদিনের মতো মাঠে গিয়েছিলেন। হঠাৎ ঝড়-বৃষ্টি শুরু হলে আমরা ভাবছিলাম উনি ফিরবেন। পরে জানতে পারি বজ্রপাতে মারা গেছেন।”
বজ্রপাতের সময় বনগজ গ্রামের মাঠে থাকা দুইটি গরুও মারা যায় বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা।
নাসিরনগর ও আখাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা বজ্রপাতে মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। কোনো অভিযোগ না থাকায় নিহতদের মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
আবহাওয়াবিদরা বজ্রপাতকালে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন এবং খোলা মাঠে কাজ থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দিয়েছেন।