রাজধানীর কুরবানির পশুর হাটগুলো ইতোমধ্যেই পশুতে পরিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। কিন্তু বেচাকেনা তেমন জমেনি। হাটের শেড, অবকাঠামো ও নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনার কাজ শেষ হয়েছে বেশ আগেই। আগাম পশু এনে ব্যবসায়ীরা হাট ভরালেও ক্রেতা উপস্থিতি এবং লেনদেন আশানুরূপ নয় বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, রাজধানীর গাবতলী, দিয়াবাড়ি, কুড়িল-পূর্বাচল, ঢাকা পলিটেকনিক মাঠ, বারিধারা নতুনবাজারসহ সব হাটেই হাজার হাজার কুরবানির পশু উঠেছে। প্রতিটি হাটেই ট্রাকযোগে এখনো পশু আসছে। বিশেষ করে গাবতলী হাটে দেশীয় গরু ছাড়াও দুম্বা, ছাগল, মহিষ ও উট দেখা গেছে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, যেহেতু কুরবানি ঈদের আর কিছুদিন বাকি, তাই বিক্রির চাপ এখনো শুরু হয়নি। আবার অনেক ক্রেতা হাটে এলেও ভিড়, নিরাপত্তা এবং বৃষ্টির কারণে কেউ কেউ এখনও পশু কিনতে অনাগ্রহী। এছাড়া ব্যবসায়ীরা গরুর দাম তুলনামূলক বেশি হাঁকছেন, ফলে দরদাম মিলছে না।
কুষ্টিয়ার পাটিকাবাড়ি থেকে আসা ব্যবসায়ী মনিরুল মালিথা জানান, তিনি ছোট, মাঝারি ও বড় আকৃতির ২৫টি গরু এনেছেন, যেগুলোর দাম ১ লাখ ৪০ হাজার থেকে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত হাঁকছেন। চুয়াডাঙ্গার রুবেল হোসেনও বড় আকৃতির দেশি গরু এনেছেন, দাম হাঁকছেন দেড় থেকে সাড়ে ৪ লাখ টাকা।
টাঙ্গাইলের মতিয়ার হোসেন জানান, তার গরু হাটে পৌঁছায়নি, তবে আগেভাগে এসে শেড বুকিং দিয়েছেন যাতে ভালো জায়গা পান।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, একদিকে হাটের ভাড়া ও পরিবহন খরচ বেশি, অন্যদিকে বৃষ্টি ও কাদা মাটির ভোগান্তি থাকায় তাদের দুশ্চিন্তা বাড়ছে। এছাড়া দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রশাসনিক জটিলতার কারণে ইজারা ও ব্যবস্থাপনা ঠিকমতো হয়নি বলেও অভিযোগ রয়েছে।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ জানিয়েছেন, হাট ব্যবস্থাপনায় যাতে কোনো বিশৃঙ্খলা না হয়, সেজন্য নজরদারি জোরদার করা হয়েছে। অন্যদিকে দক্ষিণ সিটির প্রশাসক মো. শাহজাহান মিয়া জানিয়েছেন, নগর ভবন তালাবদ্ধ থাকায় কিছু সমস্যার মুখোমুখি হলেও বিকল্পভাবে তারা নির্দেশনা দিয়ে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।
হাট পরিপূর্ণ হলেও বেচাকেনা জমে না ওঠায় ব্যবসায়ীরা কিছুটা উদ্বিগ্ন। তবে ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ের প্রত্যাশা, কুরবানির ঈদের তারিখ যত ঘনিয়ে আসবে, হাট তত জমে উঠবে।