গাজীপুরের শ্রীপুরে কাঁঠালের মৌসুমে জমজমাট হয়ে উঠেছে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পাশে জৈনাবাজার। দেশের জাতীয় ফল কাঁঠাল এখন শুধু স্থানীয় বাজারেই নয়, পাড়ি জমাচ্ছে দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিদেশেও। গাজীপুরের কাঁঠালের স্বাদ, ঘ্রাণ এবং মানে খ্যাতি রয়েছে সারাদেশে। আর এই জনপ্রিয়তার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে শ্রীপুরের বিশাল পাইকারি বাজার।
জেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি কাঁঠাল উৎপাদিত হয় শ্রীপুর উপজেলায়। এখানকার উঁচু ও লাল মাটিতে কাঁঠালের ফলন হয় বেশি, যা তুলনামূলকভাবে মিষ্টি ও সুগন্ধি। কৃষি বিভাগ বলছে, এ বছর কাঁঠালের উৎপাদন এবং বাজারজাতকরণে ইতিবাচক প্রবণতা দেখা যাচ্ছে।
জৈনাবাজারে প্রতিদিন বসছে কাঁঠালের বিশাল হাট। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা পাইকাররা ভ্যান ও ট্রাকভর্তি কাঁঠাল কিনে নিয়ে যাচ্ছেন নোয়াখালী, চট্টগ্রাম, ফেনী, সিলেট, বরিশালসহ নানা অঞ্চলে। বাজারজুড়ে আড়তদারদের ব্যস্ততা, দর কষাকষি আর ফল বাছাইয়ের দৃশ্য যেন কাঁঠালপ্রেমীদের জন্য উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি করেছে।
স্থানীয় চাষি আব্দুল কাদির বলেন, “গাছের খুব একটা যত্ন করতে হয় না, তবুও ফলন ভালো হয়। এবার আমার বাগানে প্রচুর কাঁঠাল ধরেছে।” তিনি জানান, ইতোমধ্যে অর্ধেকের বেশি কাঁঠাল বিক্রি করেছেন, দামও পেয়েছেন ভালো।
তবে বাজারের সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও কাঁঠাল সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণে নেই কার্যকর উদ্যোগ। ফলে মৌসুম শেষে প্রচুর কাঁঠাল নষ্ট হয় বলে জানান স্থানীয় ব্যবসায়ীরা।
ফেনী থেকে আসা পাইকার কামাল হোসেন বলেন, “শ্রীপুরের কাঁঠাল খুবই সুস্বাদু। এখানকার কাঁঠালের চাহিদা আমাদের এলাকায় অনেক বেশি।”
শ্রীপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সুমাইয়া সুলতানা বন্যা বলেন, “এ বছর কাঁঠালের ফলন অতীতের তুলনায় বেশি। বাজারে সরবরাহ ভালো হচ্ছে। আমরা চেষ্টা করছি যাতে সরকারি উদ্যোগে আরও বেশি কাঁঠাল বিদেশে রপ্তানি করা যায়।”
প্রতিবছর গাজীপুরে গড়ে ৮০ হাজার মেট্রিক টনের বেশি কাঁঠাল উৎপাদিত হয়। যদি সংরক্ষণ ও রপ্তানি সুবিধা আরও বিস্তৃত হয়, তবে দেশের জাতীয় ফল কাঁঠাল আন্তর্জাতিক বাজারেও গুরুত্বপূর্ণ কৃষিপণ্য হিসেবে জায়গা করে নিতে পারবে—এমনটাই প্রত্যাশা সংশ্লিষ্টদের।