টাঙ্গাইলে ময়মনসিংহ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর আওতাধীন পাঁচ উপজেলায় অনুমানভিত্তিক বিদ্যুৎ বিল তৈরি করে হাজার হাজার গ্রাহকের ওপর অস্বাভাবিক আর্থিক চাপ সৃষ্টি করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সংশ্লিষ্ট পল্লী বিদ্যুৎ কর্মকর্তারাও অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করেছেন।
সরেজমিন অনুসন্ধানে জানা যায়, উত্তর টাঙ্গাইলের গোপালপুর, মধুপুর, ধনবাড়ী, ঘাটাইল ও ভূঞাপুর উপজেলায় পল্লী বিদ্যুৎ গ্রাহকের সংখ্যা প্রায় দুই লক্ষ। জুন মাসের বিল হাতে পাওয়ার পর থেকে ক্ষোভে ফুঁসছেন সাধারণ গ্রাহকরা। যাদের গড় বিল ৩০০ থেকে ৪০০ টাকার মধ্যে থাকত, তারা এবার পেয়েছেন হাজার টাকার বেশি বিল।
সোনামুই গ্রামের অন্তত ৪৫ জন গ্রাহক জানিয়েছেন, মিটার রিডিং না দেখে অনুমান করে ৫০ থেকে ৩৫০ ইউনিট পর্যন্ত বেশি দেখিয়ে বিল তৈরি করা হয়েছে। স্থানীয় গৃহবধূ রহিমা বেগম বলেন, “আমার মিটারে ইউনিট ছিল ১০১৫, অথচ বিল করা হয়েছে ১২৬৫ ইউনিট। এতে প্রায় দ্বিগুণ টাকা দিতে হচ্ছে।”
ধোপাকান্দি ইউনিয়নের তাওফিক আহমেদ বলেন, “৩০ জুন পর্যন্ত মিটারে ইউনিট ছিল ৬৪৭৫, অথচ ৮ জুন তারিখ দেখিয়ে ইউনিট দেখানো হয়েছে ৬৬৩০। এটা একেবারেই অসঙ্গত।”
মসজিদ কমিটির সভাপতি বিপ্লব খান জানান, “মসজিদের বর্তমান ইউনিট ১৫৮৬, অথচ বিল এসেছে ১৭২০ ইউনিট হিসেবে।”
এমন অভিযোগ ধনবাড়ীর মুশুদ্দী, মধুপুরের পিরোজপুর, ঘাটাইলের গারোবাজারসহ বেশ কয়েকটি গ্রামেও পাওয়া গেছে। তিন মাস ধরে মিটার রিডাররা কর্মবিরতিতে থাকায় মাঠে না গিয়ে অফিসে বসেই অনুমান করে বিল করেছেন বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে মধুপুর জোনাল অফিসের ডিজিএম এমাজ উদ্দীন সর্দার বলেন, “মিটার রিডাররা আন্দোলনে থাকায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। ভুল বিল সংশোধনের জন্য অফিসে এলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। দায়িত্বে গাফিলতি করা কর্মীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
গোপালপুর জোনাল অফিসের ম্যানেজার দেলোয়ার হোসেন জানান, “১২-১৩ জন গ্রাহকের বিল ইতোমধ্যে সংশোধন করা হয়েছে। ধাপে ধাপে অন্যান্য সমস্যাও সমাধান করা হবে।”
উল্লেখ্য, পল্লী বিদ্যুৎ নিয়ম অনুযায়ী বিভিন্ন ইউনিট সীমার মধ্যে ভিন্ন ভিন্ন ট্যারিফ হার কার্যকর থাকে। ফলে অতিরিক্ত ইউনিট দেখানো হলে বিলের পরিমাণও কয়েকগুণ বেড়ে যায়।
এ অবস্থায় ক্ষুব্ধ গ্রাহকরা দ্রুত বিল সংশোধন এবং অনুমাননির্ভর বিলিং বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন।