গুয়াদালুপ নদীর পানি বেড়ে ভয়াবহ বিপর্যয়, উদ্ধার অভিযানে তৎপর প্রশাসন
যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস অঙ্গরাজ্যে আকস্মিক বন্যায় অন্তত ২৪ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। নিখোঁজ রয়েছে অন্তত ২০ জন কন্যাশিশু। স্থানীয় সময় শুক্রবার সন্ধ্যায় স্যান অ্যান্টোনিও শহরের পার্শ্ববর্তী কের এলাকায় এ ভয়াবহ দুর্যোগ ঘটে।
ঘটনার সময় গুয়াদালুপ নদীর তীরে গ্রীষ্মকালীন একটি ক্যাম্পে প্রায় ৭৫০ শিশু অবস্থান করছিল। প্রবল বর্ষণে নদীর পানি হঠাৎ ২৬ ফুট পর্যন্ত বেড়ে যায়, যার জেরে নদী তীরবর্তী ক্যাম্প ও আশপাশের এলাকা বন্যার পানিতে তলিয়ে যায়। নিখোঁজ শিশুরা ওই ক্যাম্পের অংশগ্রহণকারী বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।
কের এলাকার পুলিশ কর্মকর্তা ল্যারি লেইথা এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, “এখন পর্যন্ত ২৪ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করা হয়েছে। নিখোঁজদের সন্ধানে ব্যাপক তল্লাশি চালানো হচ্ছে। নিখোঁজদের অধিকাংশই শিশু, সংখ্যাটি ২৩ থেকে ২৫ জনের মধ্যে।”
টেক্সাসের লেফটেন্যান্ট গভর্নর ড্যান প্যাট্রিক বলেন, “প্রচণ্ড বর্ষণে মাত্র ৪৫ মিনিটে নদীর পানি বিপজ্জনক হারে বেড়ে যায়। এটি এক ভয়ানক পরিস্থিতি তৈরি করেছে।”
বন্যার প্রভাবে ঘরবাড়ি, গাছপালা এবং যানবাহনের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া বিভিন্ন ভিডিওতে দেখা যায়, প্রবল স্রোতের কারণে ঘরবাড়ি ভেসে যাচ্ছে এবং গাছপালা উপড়ে পড়ছে।
স্থানীয় আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাতে কের এলাকায় ১২ ইঞ্চি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে, যা অঞ্চলটির বার্ষিক গড় বৃষ্টির এক-তৃতীয়াংশ।
টেক্সাসের গভর্নর দ্রুত উদ্ধার ও সহায়তা কার্যক্রম চালাতে রাজ্যজুড়ে ‘বিপর্যয় ঘোষণা’ স্বাক্ষর করেছেন।
হোয়াইট হাউসে এক ব্রিফিংয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, “এই বন্যা এক ভয়াবহ ও হতবাক করে দেওয়ার মতো ঘটনা। আমরা টেক্সাসবাসীর পাশে আছি এবং জরুরি সহায়তা নিশ্চিত করতে কাজ করছি।”
এদিকে নিখোঁজ শিশুদের পরিবারের মাঝে উৎকণ্ঠা বাড়ছে। অনেকেই আশ্রয়কেন্দ্রে অপেক্ষা করছেন প্রিয়জনের খোঁজে। উদ্ধারকাজে নিযুক্ত রয়েছে ন্যাশনাল গার্ড, ফায়ার সার্ভিস এবং স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী দল।
উদ্ধারকর্মীরা জানিয়েছেন, বৃষ্টি কমলেও পরিস্থিতি এখনও বিপজ্জনক। পরবর্তী কয়েক দিন নতুন করে বৃষ্টির পূর্বাভাস থাকায় সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।