আইপিএল মানেই টাকার ঝনঝনানি, তারকাদের রোশনাই আর উত্তেজনায় ভরপুর ক্রিকেট। তবে মাঠের বাইরেও যে একটি বড় খেলা চলে, সেটা অনেক সময় চোখ এড়িয়ে যায় দর্শকদের। ক্রিকেট মাঠে যতটা আলো থাকে ব্যাট-বল হাতে খেলোয়াড়দের উপর, ততটাই গুরুত্ব পায় ধারাভাষ্যকারদের কণ্ঠও। কারণ তাঁদের চোখ আর কণ্ঠেই ফুটে ওঠে মাঠের নাটকীয়তা, দর্শকদের আবেগে যোগ হয় বাড়তি উত্তেজনা। আর সেই কাজের জন্য ধারাভাষ্যকারদের বেতনও যে কম নয়, তা যেন স্বীকার করে নেয় গোটা ক্রিকেট বিশ্ব।
বিশেষ করে আইপিএলের মতো বিশাল মাপের টুর্নামেন্টে ধারাভাষ্যকারদের চাহিদা আকাশছোঁয়া। একটি মৌসুমেই কেউ কেউ আয় করেন কোটি টাকারও বেশি। সূত্রমতে, সুনীল গাভাস্কারের মতো কিংবদন্তি ধারাভাষ্যকাররা প্রতি মৌসুমে আয় করেন প্রায় ৫-৬ কোটি টাকা। হার্শা ভোগলে, যিনি ক্রিকেট বিশ্লেষণ আর নিখুঁত বর্ণনার জন্য বিশ্বজোড়া খ্যাতি পেয়েছেন, তাঁর আয় মৌসুমপ্রতি প্রায় ৩-৪ কোটি টাকা। রবি শাস্ত্রীর মতো সাবেক ক্রিকেটার ও প্রাক্তন কোচের বেতনও প্রায় একই রকম।
যাঁরা তুলনামূলক নতুন ধারাভাষ্যকার, তাঁদের আয় অবশ্য একটু কম, তবে সেটাও কয়েক লাখ থেকে শুরু করে প্রতি ম্যাচে কয়েক লাখ টাকা পর্যন্ত হতে পারে। ভাষার ভিত্তিতেও পারিশ্রমিকের ভিন্নতা দেখা যায়। হিন্দি, ইংরেজি ধারাভাষ্যে জনপ্রিয়দের আয় বেশি, আবার আঞ্চলিক ভাষার ধারাভাষ্যকারদের আয় তুলনামূলকভাবে কম হলেও দিনে দিনে সেটাও বাড়ছে।
সম্প্রচারের দায়িত্বে থাকা ব্রডকাস্টাররা চ্যানেল অনুযায়ী পারিশ্রমিক নির্ধারণ করেন, এবং সেই অনুযায়ী যারা দর্শকদের হৃদয়ে জায়গা করে নিতে পারেন, তাঁদের মাইক্রোফোনের দামও বাড়ে।
তবে শুধু টাকা নয়, এই পেশার সঙ্গে জড়িয়ে আছে ক্রিকেটকে ভালোবাসা, বিশ্লেষণের দক্ষতা আর দর্শকদের সঙ্গে এক ধরণের আত্মিক যোগাযোগ। এই কারণে আইপিএলের মঞ্চে ধারাভাষ্যকাররাও হয়ে ওঠেন ‘ক্রিকেটের নায়ক’।
অবশেষে বলা যায়, আইপিএলে শুধু খেলোয়াড় নন, কণ্ঠ দিয়েও কেউ কেউ খেলে যাচ্ছেন কোটি টাকার ইনিংস।