গাজায় চলমান যুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্যে শিশুদের অবস্থা ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। পর্যাপ্ত খাদ্য ও চিকিৎসার অভাবে বহু শিশু মারা যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন আল-রান্তিসি হাসপাতালের শিশু বিভাগের প্রধান ডা. শরীফ মাতার। তিনি বলেন, “দুধের অভাবে অনেক পরিবার তাদের শিশুকে হাসপাতালে নিয়ে আসছে, তবে আমাদের হাতেও আর কিছু নেই।”
আল-মায়াদিনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ডা. মাতার জানান, গাজার স্বাস্থ্যব্যবস্থা সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছে। নেই পর্যাপ্ত ওষুধ, নেই পরিষ্কার পানি, নেই বিদ্যুৎ বা জ্বালানির যোগান। এসব সংকটের কারণে সেখানে ছড়িয়ে পড়ছে ভয়ংকর সংক্রামক রোগ, যার মধ্যে শিশুদের মধ্যে মেনিনজাইটিসের ব্যাপকতা উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। “আমরা প্রতিদিন অসংখ্য মেনিনজাইটিস আক্রান্ত শিশুকে ভর্তি করছি,”—বলেন তিনি।
ডা. মাতার দৃঢ়ভাবে বলেন, “এটা শুধু মানবিক সংকট নয়, এটি একটি সচেতনভাবে তৈরি করা বিপর্যয়। যুদ্ধ থামানোই একমাত্র সমাধান।” তিনি উল্লেখ করেন, মানুষ এখন একটুকরো রুটির জন্য জীবন ঝুঁকিতে ফেলছে। সাহায্যের জন্য অপেক্ষা করতে গিয়ে অনেকে ইসরায়েলি গুলির শিকার হচ্ছেন।
এদিকে, হামাসের পক্ষ থেকেও সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে যে, শিশুরা সবচেয়ে ঝুঁকিতে রয়েছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বর্তমানে শত শত শিশু মারাত্মক অপুষ্টিতে ভুগছে এবং তাদের অনেকেই মারা যাওয়ার দ্বারপ্রান্তে।
ডা. মাতার এবং অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীরা জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির উদ্যোগ নিতে এবং জরুরি মানবিক সহায়তা পাঠাতে। “বিশ্ব যেন আর চোখ বন্ধ না রাখে,”—এমনটাই অনুরোধ গাজার শিশু চিকিৎসকদের।
বিশ্লেষকদের মতে, শিশুদের স্বাস্থ্য সংকট এখন আর শুধু গাজার সমস্যা নয়, এটি পুরো বিশ্ব মানবতার প্রতি এক চরম প্রশ্ন। যুদ্ধ থামানো না গেলে গাজার শিশুদের সামনে যে বিপর্যয় অপেক্ষা করছে, তা কল্পনারও অতীত।