রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে আলোচিত তিনটি পৃথক হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় পুলিশ এখন পর্যন্ত ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। সোমবার (০৫ মে) বিকেলে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান পুলিশ সুপার মোছাঃ শামিমা পারভীন।
তিনি জানান, প্রবাসী আল আমিন হত্যা মামলায় পাবনা জেলার আমিনপুর উপজেলার দু’জনকে রবিবার (৪ মে) রাতে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা হলো গোবিন্দপুর গ্রামের রুবেল মন্ডল (২০) ও মো. শাকিল সরদার (২৪)।
গত ২৫ এপ্রিল দুপুরে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দুর্গম চরাঞ্চলের রাখালগাছি এলাকায় আল আমিনকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে নদীতে ফেলে দেওয়া হয়। পরদিন তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। আল আমিন মালয়েশিয়া প্রবাসী ছিলেন এবং সম্প্রতি ছুটিতে বাড়ি এসেছিলেন। পূর্ব শত্রুতার জেরেই এ হত্যাকাণ্ড ঘটে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এ ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় পাবনা জেলার আমিনপুর উপজেলার ধাড়াই গ্রামের মোন্তাজ সরদারের ছেলে মেগা সরদার (৪৭), একই উপজেলার চক আব্দুল শুকুর গ্রামের নায়েব আলী ফকিরের ছেলে জুয়েল রানা (৪২) ও কমরপুর গ্রামের আলো মৃধার ছেলে ঠান্ডু মৃধা (৩৫) কে আগেই গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এদের মধ্যে রুবেল মন্ডল আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে।
এদিকে চরমপন্থী নেতা সুশীল কুমার সরকার হত্যা মামলায় রবিবার (৪ মে) সকাল ৮টার সময় মো. রুবেল শেখ (২৭) নামের এক যুবককে মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। গত বছরের ২২ সেপ্টেম্বর গোয়ালন্দে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের জেরে সুশীল কুমারকে গুলি ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় আরও চারজনকে পুলিশ ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার করেছে। তারা হলো, গোয়ালন্দ উপজেলার ছোট ভাকলা ইউনিয়নের বরাট চরকাচরন্দ গ্রামের মৃত সালাম শেখের ছেলে মোঃ তোফাজ্জেল শেখ ওরফে তোফা (৩৮), মৃত মজিবর শেখের ছেলে মোঃ লোকমান শেখ (৩৫), মৃত আঃ জব্বার শেখ ওরফে দোয়াত শেখের ছেলে আশিকুল শেখ ওরফে ভাসান শেখ (২৮) ও কালাম মোল্যার ছেলে মোঃ জনি মোল্যা (৩৪) কে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
আরেকটি ঘটনায়, চরমপন্থী নেতা শহীদ মোল্লা হত্যা মামলায় রবিবার বিকেল সোয়া ৪টায় খাইরুল মন্ডল (৪৬) নামের একজনকে পাবনার দুর্গম চরাঞ্চল থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত বছরের ১৩ জুলাই নদীঘেঁষা এলাকায় আধিপত্য বিস্তার ও চাঁদাবাজিকে কেন্দ্র করে শহীদ মোল্লাকে মারধরের পর গোয়ালন্দ হাসপাতালে ফেলে যায় দুর্বৃত্তরা। তার বিরুদ্ধেও ৩টি হত্যা মামলাসহ পাঁচটি মামলা ছিল।
পুলিশ সুপার জানান, প্রতিটি ঘটনার পরই তদন্ত করে জড়িতদের চিহ্নিত ও গ্রেপ্তার করতে বিশেষ অভিযান চালানো হয়েছে। অপরাধ দমনে গঠিত জেলা পুলিশের বিশেষ টিম এবং তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে এসব সাফল্য এসেছে।
এ প্রেস ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও অপারেশন) শরীফ আল রাজীব, সহকারী পুলিশ সুপার (পাংশা সার্কেল) দেব্রত সরকারসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা।