ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল এখনও বন্যার প্রভাবে বিপর্যস্ত। আসাম, অরুণাচল প্রদেশ, মেঘালয়, মিজোরাম, ত্রিপুরা, নাগাল্যান্ড ও মণিপুর—মোট সাতটি রাজ্যে বন্যার কারণে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৪৪-এ পৌঁছেছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রাণহানি ঘটেছে আসামে, যেখানে মারা গেছেন ১৭ জন। অরুণাচলে ১২, মেঘালয়ে ৬, মিজোরামে ৫, ত্রিপুরায় ২ এবং নাগাল্যান্ড ও মণিপুরে একজন করে মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
পানিতে ডুবে যাওয়া, ভূমিধস, পানিবন্দি অবস্থায় দুর্ঘটনা—বন্যার এই ঘনঘন প্রাকৃতিক দুর্যোগে এসব মৃত্যু হয়েছে। বিপর্যয় মোকাবেলায় সাত রাজ্যের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগ কাজ করছে, তবে পরিস্থিতি এখনও আশঙ্কাজনক। আসামের অন্তত ২১টি জেলায় প্রায় ৬ লাখ ৩০ হাজার মানুষ বন্যার প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ব্রহ্মপুত্র নদীসহ অন্যান্য নদীগুলো এখনও বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে, যা আরও বন্যার আশঙ্কা সৃষ্টি করছে।
অরুণাচলে ঘরবাড়ি, রাস্তা, বিদ্যুৎ ও পানির লাইন ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মিজোরামে ভূমিধসের পরিমাণ ১০ দিনের মধ্যে ৫০০ ছাড়িয়েছে, যেখানে তিনজন মিয়ানমার থেকে আশ্রয় নেওয়া শরণার্থীও প্রাণ হারিয়েছেন।
এই সংকট মোকাবেলায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আসাম, সিকিমের মুখ্যমন্ত্রী এবং মণিপুরের রাজ্যপালকে ফোন করে পরিস্থিতির খোঁজখবর নিয়েছেন এবং কেন্দ্র থেকে পূর্ণ সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন।
ত্রিপুরা, মেঘালয় ও নাগাল্যান্ডে কিছুটা পরিস্থিতি স্থিতিশীল হলেও এখনও বহু মানুষ নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য অপেক্ষায় রয়েছেন। সরকারি ও বেসরকারি ত্রাণকর্মীরা দ্রুত সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়ে চলেছেন, যাতে ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন ও পুনরুদ্ধারে দ্রুত উদ্যোগ নেওয়া যায়।
উত্তর-পূর্বের এই বন্যা দুর্ঘটনা আগামী দিনে আরও কঠোর হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে, কারণ মৌসুমি বৃষ্টিপাত এখনও অব্যাহত রয়েছে এবং নদীগুলোর জলস্তর নিয়ন্ত্রণে আসেনি। স্থানীয় প্রশাসন ও কেন্দ্রের তৎপরতা অব্যাহত থাকবে বলে জানানো হয়েছে।