ইসরাইলি বাহিনীর গুলিতে গাজা উপত্যকার মধ্যাঞ্চলে ত্রাণকেন্দ্রে জড়ো হওয়া বেসামরিক মানুষের ওপর সরাসরি হামলায় নিহত হয়েছেন কমপক্ষে ৫৮ জন ফিলিস্তিনি। আহত হয়েছেন আরও বহু মানুষ।
ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা ওয়াফা জানায়, শনিবার সকালে ইসরাইলি সেনারা গাজা শহরের একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে খাদ্যের জন্য অপেক্ষমাণ মানুষের ওপর অতর্কিতে গুলি চালায়। এতে ঘটনাস্থলেই ১৫ জন নিহত হন। বাকি হতাহতদের স্থানীয় আল-আওদা ও আল-আকসা হাসপাতালে নেয়া হয়।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, গত কয়েক সপ্তাহে ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্র লক্ষ্য করে পরিচালিত ইসরাইলি হামলায় মোট নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৭৪ জনে। আহত হয়েছেন ২ হাজারের বেশি। চলমান আগ্রাসনে গাজায় এখন পর্যন্ত ৫৫ হাজারের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু।
জাতিসংঘের মানবিক বিষয়ক সমন্বয় কার্যালয়ের (OCHA) মুখপাত্র জেন্স লারকে এক বিবৃতিতে বলেন, গাজায় ত্রাণ বিতরণে নিয়োজিত যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইল সমর্থিত সংস্থা গাজা হিউম্যানট্যারিয়ান ফাউন্ডেশন (Gaza Humanitarian Foundation – GHF) সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে।
“এই সংস্থাটি কার্যত ত্রাণ নয়, বরং সামরিক প্রাধান্যকে গুরুত্ব দিচ্ছে,” বলেন লারকে। তিনি জানান, জাতিসংঘ ও অন্যান্য সহায়তা সংস্থা জিএইচএফ-এর সঙ্গে কাজ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।
জিএইচএফ দাবি করেছে, ২৬ মে থেকে এখন পর্যন্ত তারা এক কোটি ৮০ লাখেরও বেশি ত্রাণ বিতরণ করেছে। তবে বাস্তবতার সঙ্গে এই পরিসংখ্যানের কোনো মিল নেই বলে জানিয়েছে স্থানীয় সূত্র।
শুক্রবারও ইসরাইলি বিমান হামলায় নিহত হয়েছেন আরও ৪৪ জন ফিলিস্তিনি। আলজাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, খান ইউনুস শহরের বিভিন্ন অংশে তীব্র বোমা হামলা চালিয়েছে ইসরাইলি বাহিনী।
এদিকে গাজায় ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা ধ্বংস হয়ে যাওয়ায় লক্ষাধিক মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। খাদ্য, পানি ও ওষুধের সংকট চরম আকার ধারণ করেছে। শিশুদের মধ্যে মারাত্মক অপুষ্টি ছড়িয়ে পড়ছে বলে সতর্ক করেছে জাতিসংঘ।
মানবাধিকার সংগঠনগুলো গাজায় চলমান এই হত্যাযজ্ঞের দ্রুত অবসান ও আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপের দাবি জানিয়েছে।