নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার কলিমহর ইউনিয়নে ১৪টি বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও লুটপাট করেছে দুর্বৃত্তরা। কলিমহর ইউনিয়নের চর কলিমহর ও বসা কুষ্টিয়া গ্রামে মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটেছে।
জানা যায়, ৫০-৬০ জনের সংঘবদ্ধ একদল দুর্বৃত্ত দেশীয় অস্ত্র রামদা, চাপাতি, কুড়াল, হকিস্টিক ও লাঠিসোঁটা নিয়ে এ হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও লুটপাট করে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো আওয়ামী লীগের সমর্থক বলে জানা যায়।
চর কলিমহর গ্রামের মৃত আবু বকস মণ্ডলের ছেলে সাইদুর রহমান, তার ভাই ফজলু মণ্ডল, খলিল মণ্ডলসহ একই এলাকার মৃত হোসেন মণ্ডলের ছেলে ওহাব মণ্ডল ও সিদ্দিকুর রহমান শামের বাড়ি ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়েছে। এছাড়াও পলাশ মণ্ডলের সার ও কীটনাশকের দোকান ভাঙচুর করে নগদ অর্থ ও কীটনাশক লুটে নিয়েছে দুর্বৃত্তরা।
একই রাতে ইউনিয়নের বসা কুষ্টিয়া গ্রামের কুদ্দুস মণ্ডলের ছেলে মমিন মণ্ডল, আ: আজিজের ছেলে জহির মণ্ডল, মৃত আজব আলী শেখের ছেলে জাহিদ শেখ, আব্দুল শেখের ছেলে আনিস আহমেদ মানিক, আ: গফুর শেখের ছেলে আবু শেখ, সাবু শেখ, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মৃত মঙ্গল শেখের ছেলে ইয়াসিন আলী শেখ, মৃত আজের আলী মোল্লার ছেলে নিজাম মোল্লা, মৃত তিলাম আলী শেখের ছেলে আ: আজিজ শেখের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেছে দুর্বৃত্তরা।
হামলায় আজিজ শেখের ছেলে রুবেল ও ইয়াসিন শেখের পুত্রবধূ মনছুরা খাতুনের হাতে জখম হয়েছে।
হামলার শিকার পরিবারগুলো জানায়, আমরা আওয়ামী লীগ করায় আমাদের বাড়িতে হামলা চালানো হয়েছে। আমরা কাউকে চিনতে পারিনি।
ফজলু মণ্ডলের স্ত্রী জানান, রাতে আমরা সবাই বাইরে রান্না করছিলাম, এ সময় আমার ঘরে বেড়া কুপিয়ে ভিতরে প্রবেশ করে নগদ দেড় লক্ষ টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার লুট করে নিয়ে যায়।
মমিন মণ্ডলের স্ত্রী রেনু খাতুন বলেন, আমার স্বামীর ডিস লাইনের ব্যবসা ছিল। ৫ আগস্টের পর কিছু লোকজন সেটিও কেড়ে নিয়েছে। এছাড়াও ১৫-২০ দিন আগে আমাদের পুকুরে বিষ দিয়ে মাছ মেরে নিয়েছে। এর মধ্যেই আবার (মঙ্গলবার) রাতে ৫০-৬০ জন মিছিল করে আমাদের বাড়িতে হামলা করে ভাঙচুর করেছে। তাদের কাছে রামদা, কুড়াল, চাপাতি, হকিস্টিক ও লাঠিসোঁটা ছিল।
সাইদুর রহমান জানান, রাত ৯টার দিকে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে এসে আমার ঘরের টিনের বেড়া কেটে ফেলেছে। আসবাবপত্র ভেঙে গুড়িয়ে দিয়েছে। প্রাণের ভয়ে রাতে আমরা পালিয়ে ছিলাম।
অতর্কিত এসব বাড়িতে হামলার ঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে। অনেকে ভয়ে বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে।
এ ব্যাপারে পাংশা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ সলাউদ্দিন জানান, রাতেই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক আছে। এখন পর্যন্ত কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।