নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজবাড়ীতে এক নারী আইনজীবিকে গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে নিয়ে ধর্ষণ চেষ্টা, শ্লীলতাহানি ও ৩০ লক্ষ টাকা চাঁদার দাবির অভিযোগে ও সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর গ্রহণের অভিযোগে পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টর (এসআই)সহ ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে। সোমবার বিকেলে রাজবাড়ী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতে মামলাটি দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী আইনজীবি। এ ঘটনায় আদালতের বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) শেখ মফিজুর রহমান মামলাটি রাজবাড়ী সদর থানার ওসিকে এফআইআর করার নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার আসামিরা হলেন—রাজশাহী মহানগরের চন্দ্রিমা থানার ছোট বনগ্রামের শেখ আব্দুল্লাহ, রাজশাহীর চারঘাট থানার চকবেলঘরিয়া গ্রামের লুৎফর রহমানের ছেলে ও রাজশাহী আরএমপি বোয়ালিয়া থানার সাব-ইন্সপেক্টর (এসআই) মো. মাহফুজুর রহমান, রাজশাহীর শাহমখদুম এলাকার বাসিন্দা মো. জাহিদ উল আলম, রাজশাহীর রাজপাড়া থানার চন্ডিপুর গ্রামের রোমান ইসলাম এবং মো. সালাম।
মামলার অভিযোগে জানা যায় ২০২৪ সালের ১ এপ্রিল দুপুর দেড়টা থেকে আড়াইটার মধ্যে ভুক্তভোগী আইনজীবি আদালত থেকে বের হয়ে প্রধান সড়কে গেলে রাজবাড়ী জেলা পরিষদ ডাক বাংলোর সামনে ট্রাফিক আইল্যান্ডের কাছে তাকে আটক করে পুলিশ। গাড়িতে একজন নারী কনস্টেবল থাকলেও পূর্বপরিকল্পিতভাবে তাকে নিয়ে যাওয়ার সময় রাতে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের উদ্দেশ্যে ওই নারী কনস্টেবলকে বমি বন্ধের কথা বলে ঘুমের ওষুধ খাওয়ায়, এতে তিনি অচেতন হয়ে পড়েন।
গাড়ির ভেতরে আলো বন্ধ করে এসআই মো. মাহফুজুর রহমান আইনজীবির হাত থেকে মোবাইল কেড়ে নিয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। এ সময় মো. জাহিদ উল আলম ও মো. সালাম আইনজীবির গায়ে হাত তোলেন এবং চর ও থাপ্পড় মারেন। চলন্ত গাড়িতে শেখ আব্দুল্লাহ ও এসআই মো. মাহফুজুর রহমান আইনজীবির শরীরের স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেন এবং তার পড়নের কাপড় ছিঁড়ে ফেলেন।
পাশাপাশি, মো. সালাম ও রোমান ইসলাম তার শরীরে পৈশাচিক নির্যাতন চালান। এক পর্যায়ে গাড়িতে থাকা সকলে জোরপূর্বক তাকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। আইনজীবি শোর চিৎকার করলে অচেতন কনস্টেবল জেগে ওঠেন।
এসআই মাহফুজুর রহমান ২০২৪ সালের ১৬ এপ্রিল থেকে ১৮ এপ্রিল পর্যন্ত রিমান্ডে এনে আইনজীবিকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করেন। পরে তার সহযোগিতায় অনুমতি ছাড়াই ভিডিও এবং স্থিরচিত্র ধারণ করা হয়। এই ভিডিও চিত্র আদালতে পৌঁছানোর আগেই প্রকাশ হয়ে যায়।