ক্ষমতার লোভে বিএনপি আজ বেহুঁশ অবস্থায় রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। রাজধানীর গুলশানে শনিবার রাতে এনসিপি আয়োজিত ‘মৌলিক সংস্কার ও আগামীর রাজনীতি’ শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, “ক্ষমতার মোহে আপনারা (বিএনপি) বাস্তবতা থেকে বিচ্যুত হয়েছেন। রাষ্ট্র এবং জনগণের স্বার্থ বিসর্জন দিয়ে হুমকি-ধামকি দিয়ে ক্ষমতায় আসা সম্ভব নয়। আমরা এখনো আপনাদের হুঁশে ফেরার আহ্বান জানাচ্ছি।”
নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী আরও বলেন, “সংস্কার বাংলাদেশে হবেই, বিচারও হবে। গণতন্ত্রে ফিরতে হলে আগে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর সংস্কার জরুরি।” তিনি বলেন, বিচার বিভাগ, নির্বাচন কমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশন, সরকারি কর্ম কমিশনসহ রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলো যে অবস্থা তৈরি হয়েছে, তাতে জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনা ছাড়া বিকল্প নেই।
কর্মশালায় আলোচক হিসেবে বিশিষ্ট আলোকচিত্রী শহিদুল আলম বলেন, “বাংলাদেশে টেকসই পরিবর্তনের জন্য সব অংশীজনকে একসঙ্গে লড়াই করতে হবে।”
অর্থনীতিবিদ জিয়া হাসান বলেন, “গণ-অভ্যুত্থানের ধারক-বাহক শক্তি হিসেবে এনসিপির প্রতি জনগণের অনেক প্রত্যাশা আছে। সেই প্রত্যাশা পূরণে দলটির সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে যেতে হবে।”
এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার বলেন, “আমরা নির্বাচনের বিরোধিতা করছি—এই অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। আসলে আমরা বলছি, একটি অর্থবহ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য রাষ্ট্রের মৌলিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সংস্কার অত্যন্ত জরুরি।”
লেখক ও মানবাধিকারকর্মী মুস্তাইন জহির বলেন, “স্বাধীনতার পর রাষ্ট্রযন্ত্র এমন সংকটে কখনো পড়েনি। আজ প্রশাসন, পুলিশ, বিচার বিভাগসহ সকল স্তরে যে অবনতি হয়েছে, তা থেকে উত্তরণের জন্য নতুন পথরেখা দরকার।”
কর্মশালায় আরও বক্তব্য দেন বিডিজবসের সিইও ফাহিম মাশরুর, কাতারের নর্থ ওয়েস্টার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক হাসান মাহমুদ, ‘ট্রাক লাগবে’-এর প্রতিষ্ঠাতা এনায়েত রশিদ প্রমুখ। তারা সবাই মৌলিক সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা এবং তরুণ প্রজন্মের অংশগ্রহণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
এনসিপির এই কর্মশালাকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে মৌলিক সংস্কার ও বিকল্প রাজনীতির আলোচনা শুরু হয়েছে।