কুষ্টিয়া শহরের অর্জুনদাস আগরওয়ালা সড়কে এক নারী গাইনী চিকিৎসকের ওপর বর্বরোচিত হামলার ঘটনা গভীর উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। সোমবার দুপুরে লাইফ ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সামনে একদল নারী চিকিৎসক শারমিন সুলতানার ওপর টেনেহিঁচড়ে রাস্তায় এনে মারধর করেন। খবর পেয়ে তাঁর চিকিৎসক স্বামী মাসুদ রানা ছুটে আসলে তাকেও হামলার শিকার হতে হয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে দম্পতিকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানা গেছে, চিকিৎসক শারমিন সুলতানা রিকশাযোগে চেম্বারে আসার সময় পূর্বপরিকল্পিতভাবে সেখানে অবস্থান করা একদল নারী তাঁকে আক্রমণ করেন। হামলাকারীরা তাঁর চুল ধরে টেনে রাস্তায় ফেলে মারধর করেন এবং তাঁর পোশাক ছিঁড়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় চিৎকার-চেঁচামেচিতে স্থানীয়রা এগিয়ে এলে পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, অনেক নারী দলবদ্ধভাবে ওই চিকিৎসকের ওপর হামলা চালান। তাঁদের অভিযোগ, চিকিৎসক শারমিন বিদেশে পাঠানো ও চাকরির ব্যবস্থা করে দেওয়ার প্রলোভনে তাঁদের কাছ থেকে অর্থ নিয়েছেন, কিন্তু প্রতিশ্রুতি পূরণ না করেই টাকা আত্মসাৎ করেছেন।
তবে চিকিৎসকের স্বামী মাসুদ রানা এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “আমার স্ত্রীকে পরিকল্পিতভাবে ফাঁসানো হচ্ছে। তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের সঙ্গে বাস্তবতার কোনো মিল নেই। হামলাকারীরা সন্ত্রাসী কায়দায় অপহরণ ও শারীরিক নির্যাতন করেছে।”
ঘটনার পরপরই কুষ্টিয়া জেলা পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা থানায় ছুটে যান। পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান জানান, “ঘটনার তদন্ত চলছে। অভিযোগের সত্যতা যাচাই না করে কাউকে দোষী বা নির্দোষ বলা যাচ্ছে না। সংশ্লিষ্টদের কাছে লিখিত কাগজপত্র চাওয়া হয়েছে।”
এদিকে চিকিৎসক মহলে এ ঘটনার তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অন্তত ১০ জন চিকিৎসক থানায় গিয়ে সহকর্মীর নিরাপত্তার দাবি জানান। একজন চিকিৎসক বলেন, “এই ধরনের ঘটনা চিকিৎসকদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করছে। আইনের মাধ্যমে সুষ্ঠু বিচার না হলে এ ধরণের হামলা আরও বাড়তে পারে।”
ঘটনার পর থেকেই থানায় অবস্থান করছেন চিকিৎসক শারমিন ও তাঁর স্বামী। পুলিশ বলছে, বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।