ঢাকার একটি আদালতের বিচারকের স্বাক্ষর জালিয়াতির মাধ্যমে সাজাপ্রাপ্ত এক আসামিকে জামিন করানোর চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় রাজধানীর সূত্রাপুর থানায় একটি প্রতারণা ও জালিয়াতির মামলা দায়ের করা হয়েছে।
মামলার বাদী ঢাকার দ্বিতীয় যুগ্ম মহানগর দায়রা জজ আদালতের বেঞ্চ সহকারী তানজিল হোসেন। তিনি বুধবার (৭ মে) থানায় দায়ের করা মামলায় মোহাম্মদপুর এলাকার মো. সোহেল রহমানসহ অজ্ঞাতনামা আরও কয়েকজনকে আসামি করেছেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, সাজাপ্রাপ্ত হাজতি আসামি মো. সোহেল রহমানের পক্ষে ২৩ মার্চ তার আইনজীবী আক্তার আলী শেখ অর্থদণ্ডের ৩৫ লাখ টাকা আদালতের নির্ধারিত কোডে চালানযোগে জমা দেওয়ার অনুমতির আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত টাকা জমা দিয়ে চালান দাখিলের নির্দেশ দিলেও, পরবর্তীতে তা দাখিল না করায় আবেদনটি নথিভুক্ত রেখে শুনানি স্থগিত করা হয়।
এরপরেও আসামিপক্ষ জামিনের কোনো আবেদন না করেই, গত ২৫ মার্চ আদালতের বিচারক মুহাম্মদ মুনির হোসাঈনের স্বাক্ষর ও সীল জাল করে একটি ভুয়া জামিন আদেশ প্রস্তুত করে। সেই আদেশে উল্লেখ করা হয় যে, আসামির অর্থদণ্ডের অর্ধেক টাকা জমা দেওয়ার প্রেক্ষিতে আদালত তাকে পাঁচ হাজার টাকা মুচলেকায় জামিন মঞ্জুর করেছে এবং তাৎক্ষণিকভাবে গাইবান্ধা জেলা কারাগারে আদেশ প্রেরণের নির্দেশ দেওয়া হয়।
অভিযোগে আরও বলা হয়, সোহেল রহমান কারাগারে থাকা অবস্থায় তার নির্দেশে একাধিক অজ্ঞাতনামা সহযোগী পরিকল্পিতভাবে বিচারকের নাম, পদবি, সীল ও স্বাক্ষর নকল করে ভুয়া আদেশ ও জামিননামা তৈরি করে। পরে এসব জাল দলিল ব্যবহার করে গাইবান্ধা জেলা কারাগারে পাঠানো হয় জামিন আদেশ ও রিলিজ আদেশ।
এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট বিচার বিভাগীয় কর্তৃপক্ষ বিষয়টি জানতে পেরে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করে এবং আসামির জামিন প্রক্রিয়া বন্ধ করা হয়।
সূত্রাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানান, বিষয়টি অত্যন্ত গুরুতর এবং বিচার বিভাগীয় স্বার্থের জন্য হুমকিস্বরূপ। মামলাটি তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।