নিউজ ডেস্ক: মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতের পণ্যে পাল্টা সমপরিমাণ শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছেন। এর ফলে ভারতে অ্যাপলের উৎপাদন পরিকল্পনা এবং দেশটির রপ্তানিমুখী প্রযুক্তি খাত বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে।
ভারতে উৎপাদন বৃদ্ধি এবং সেখান থেকে যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করার পরিকল্পনা করেছিল অ্যাপল। বিশেষজ্ঞদের মতে, ট্রাম্প প্রশাসন যদি ভারতের পণ্যে ১৬.৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে, তবে অ্যাপলের জন্য ভারতে উৎপাদন লাভজনক নাও থাকতে পারে। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র ভারত থেকে আমদানি করা আইফোনে কোনো শুল্ক আরোপ করে না। এ কারণে অ্যাপল ভারতে উৎপাদনে আগ্রহী ছিল।
শুধু অ্যাপল নয়, স্যামসাং, মোটোরোলার মতো স্মার্টফোন নির্মাতা সংস্থাগুলোর রপ্তানিও বাধার মুখে পড়বে। ভারত থেকে যুক্তরাষ্ট্রে স্মার্টফোন রপ্তানির হার উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যেতে পারে।
অন্যদিকে, ভারতের গাড়ির যন্ত্রাংশ নির্মাণকারী সংস্থাগুলোর উদ্বেগও বাড়ছে। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে ভারতীয় যন্ত্রাংশ আমদানিতে ১-২ শতাংশ শুল্ক রয়েছে, কিন্তু ভারতের আমদানি শুল্ক ৭.৫ থেকে ১৫ শতাংশের মধ্যে। ট্রাম্প প্রশাসন যদি সমপরিমাণ শুল্ক আরোপ করে, তাহলে যুক্তরাষ্ট্রে ভারতের যন্ত্রাংশ রপ্তানি কঠিন হয়ে পড়বে। ২০২৪ অর্থবছরে ভারত যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৭০০ কোটি মার্কিন ডলার মূল্যের গাড়ির যন্ত্রাংশ রপ্তানি করেছে।
এদিকে অ্যাপল সম্প্রতি ঘোষণা দিয়েছে, তারা টেক্সাসে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা গবেষণার জন্য বড় সার্ভার তৈরি এবং গবেষণা ও উন্নয়নের খাতে বিনিয়োগ করবে। আগামী চার বছরে যুক্তরাষ্ট্রে ৫০ হাজার কোটি ডলার বিনিয়োগ করে ২০ হাজার কর্মসংস্থান সৃষ্টি করার পরিকল্পনা করেছে অ্যাপল। পাশাপাশি তারা যুক্তরাষ্ট্রের সরবরাহকারীদের কাছ থেকে পণ্য ও পরিষেবা ক্রয় এবং অ্যাপল টিভি ও স্ট্রিমিং পরিষেবার জন্য টেলিভিশন শো ও চলচ্চিত্র তৈরি করবে।
এই ঘোষণার আগে অ্যাপল সিইও টিম কুক ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, বাণিজ্যিক সমীকরণ পাল্টে গেলে অ্যাপলের মতো কোম্পানি ভারতে বিনিয়োগের আগ্রহ হারাতে পারে।
ভারত-যুক্তরাষ্ট্রের এই বাণিজ্যিক টানাপোড়েন প্রযুক্তি ও উৎপাদন খাতে কী প্রভাব ফেলবে, তা নিয়ে ব্যবসায়ী মহলে উদ্বেগ বাড়ছে।