বান্দরবানের মেঘলা পর্যটন কমপ্লেক্সের মিনি চিড়িয়াখানা থেকে দুটি ভালুক, ১৩টি মায়া হরিণ, ছয়টি বানর ও একটি বনবিড়ালসহ মোট ২৩টি বন্য প্রাণী উদ্ধার করেছে বন অধিদপ্তর। বুধবার (১৬ এপ্রিল) দুপুর ৩টার দিকে এক অভিযানে এসব প্রাণী উদ্ধার করা হয়।
অভিযানে অংশ নেওয়া বন অধিদপ্তরের বন্য প্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা নুর জাহান বেগম জানান, মেঘলার ওই মিনি চিড়িয়াখানায় দীর্ঘদিন ধরে বন্য প্রাণীগুলো অননুমোদিতভাবে বন্দী করে রাখা হয়েছিল। সেখানে প্রাণীদের জন্য উপযুক্ত বাসস্থান ও পরিবেশ ছিল না। এর ফলে প্রাণীগুলো বিশেষ করে ভালুক দুটি অসুস্থ হয়ে পড়ে।
উদ্ধার করা প্রাণীগুলো কক্সবাজারের ডুলাহাজারা সাফারি পার্কে নেওয়া হয়েছে। সেখানেই তাদের পর্যবেক্ষণ ও চিকিৎসা চলছে। সাফারি পার্কের প্রাণিসম্পদ চিকিৎসক হাতেম সাজ্জাদ মো. জুলকারনাইন জানান, উদ্ধার হওয়া পুরুষ ভালুকটি ছত্রাকজনিত ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গুরুতর অসুস্থ। তার একটি পা ভেঙেছে বা অবশ হয়ে গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বাকি প্রাণীগুলোকেও আলাদা করে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
নুর জাহান বেগম আরও বলেন, বন্য প্রাণী সংরক্ষণ আইনের আওতায় অনুমতি ছাড়া কোনো প্রতিষ্ঠান বন্য প্রাণী রাখলে তা আইন লঙ্ঘনের শামিল। তাই এই অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ ছাড়া বান্দরবানের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত থেকে প্রাণীগুলো মুক্ত করে দেওয়ার বিষয়ে একটি স্বতঃপ্রণোদিত মামলা হয়েছে।
অভিযানে প্রাণিপ্রকৃতি সংরক্ষণবিষয়ক সংগঠন সেভ দ্য নেচারের চেয়ারম্যান এ এন এম মোয়াজ্জেম হোসাইনও অংশ নেন। তিনি বলেন, “চট্টগ্রামে আরও কয়েকটি জায়গায় এ ধরনের অবৈধ বন্দিশালা রয়েছে। সেগুলোও বন্ধ করে দেওয়ার কাজ চলছে।”
বান্দরবান জেলা প্রশাসনের নেজারত ডেপুটি কালেক্টর (এনডিসি) আসিফ রায়হান জানান, প্রাণীগুলোর বিষয়টি বন অধিদপ্তরের নজরে আগেই আনা হয়েছিল। তবে বিভিন্ন সীমাবদ্ধতার কারণে এতদিন অভিযান চালানো সম্ভব হয়নি।
উদ্ধারকৃত প্রাণীগুলো সম্পূর্ণ সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত সাফারি পার্কেই পর্যবেক্ষণে থাকবে। তারপরই তাদের প্রাকৃতিক পরিবেশে ছেড়ে দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।