অনেক নারীর মাসিকের সময় তলপেটে ব্যথা হওয়াকে স্বাভাবিক বলে ধরে নেওয়া হলেও এটি অনেক সময় বড় কোনো স্বাস্থ্য সমস্যার ইঙ্গিতও হতে পারে। বিশেষ করে যদি এই ব্যথা হঠাৎ করেই শুরু হয় বা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বেড়ে যায়, তাহলে বিষয়টিকে অবহেলা করা ঠিক নয়।
এমনই একটি সমস্যা নিয়ে সম্প্রতি একজন ৩০ বছর বয়সী নারী চিকিৎসকের পরামর্শ নেন। তিনি জানান, গত ছয় মাস ধরে তাঁর মাসিকের সময় তলপেটে তীব্র ব্যথা হয়, যা আগে ছিল না। সেই সঙ্গে প্রস্রাবের সময় জ্বালাপোড়াও অনুভব করেন তিনি। তবে খাদ্যাভ্যাস বা পানিপানের ক্ষেত্রে কোনো পরিবর্তন আসেনি।
এই প্রসঙ্গে পরামর্শ দিয়েছেন হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট হাসপাতালের গাইনি ও অবস বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত সহকারী অধ্যাপক এবং কলাবাগানের ল্যাবএইড লিমিটেডের (ডায়াগনস্টিকস) গাইনি বিশেষজ্ঞ ও সার্জন ডা. সালমা ইয়াসমিন।
ডা. ইয়াসমিন বলেন, “মাসিকের সময় তলপেটে ব্যথা হওয়াকে চিকিৎসা বিজ্ঞানে ডিসমেনোরিয়া বলা হয়। এই সমস্যার পেছনে একাধিক কারণ থাকতে পারে। বিশেষ করে, যদি আগে এই ধরনের ব্যথা না থাকত, তাহলে তা আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে।”
তিনি আরও জানান, এই ধরনের ব্যথার অন্যতম সম্ভাব্য কারণ হতে পারে এন্ডোমেট্রিওসিস বা পেলভিক ইনফ্ল্যামেটরি ডিজিজ (পিআইডি)। এন্ডোমেট্রিওসিস হলে জরায়ুর অভ্যন্তরের টিস্যু জরায়ুর বাইরে বেড়ে ওঠে, যা ব্যথার কারণ হতে পারে। পাশাপাশি প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া এবং সংক্রমণের লক্ষণ থাকলে ইউরিন ইনফেকশনও (ইউটিআই) এক্ষেত্রে একটি সম্ভাব্য কারণ।
চিকিৎসক পরামর্শ দিয়েছেন, এ ধরনের উপসর্গ দেখা দিলে দেরি না করে একজন গাইনিকোলজিস্টের পরামর্শ নেওয়া উচিত। তিনি বলেন, “আলট্রাসনোগ্রাফি ও ইউরিন টেস্টসহ প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সমস্যার প্রকৃত কারণ জানা যায় এবং সময়মতো চিকিৎসা গ্রহণ করলে জটিলতা এড়ানো সম্ভব হয়।”
নারীদের প্রতি তাঁর পরামর্শ, মাসিকের সময় স্বাভাবিকের বাইরে কোনো উপসর্গ দেখা দিলে তা নিয়ে সচেতন হোন, কারণ এটি হতে পারে ভবিষ্যতের বড় কোনো সমস্যা বা বন্ধ্যাত্বের পূর্বাভাসও।
সবারই উচিত নিজের শরীরের সংকেতগুলো গুরুত্ব সহকারে গ্রহণ করা এবং প্রয়োজন হলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া।