গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের বর্বর হামলা থামার কোনো লক্ষণ নেই। আন্তর্জাতিক সমালোচনা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগের মুখেও একের পর এক বিমান ও স্থল অভিযানে লিপ্ত রয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। আল-জাজিরার সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আরও ২৯ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, চলমান সংঘাতে এখন পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন ৫০ হাজার ৮৮৬ জন ফিলিস্তিনি, আহত হয়েছেন ১ লাখ ১৫ হাজার ৮৭৫ জন। তবে উপত্যকার সরকারি মিডিয়া অফিসের দাবি, ধ্বংসস্তূপে আটকে থাকা অসংখ্য মানুষের হিসাব না থাকায় প্রকৃত মৃতের সংখ্যা ৬১ হাজার ৭০০ ছাড়িয়ে গেছে।
এছাড়া, যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে গত ১৮ মার্চ থেকে ইসরায়েল বড় পরিসরে অভিযান শুরু করে। এরইমধ্যে গাজার প্রায় ৫০ শতাংশ এলাকা দখলে নিয়েছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী (আইডিএফ)। বিশ্লেষকদের মতে, এটি একটি সুপরিকল্পিত দখল প্রক্রিয়ার অংশ, যার মাধ্যমে ফিলিস্তিনিদের নিজ ভূমি থেকে সম্পূর্ণ উচ্ছেদ করে দিতে চায় ইসরায়েল।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) মহাপরিচালক টেড্রোস আধানম ঘেব্রেয়েসাস গাজায় চলমান পরিস্থিতিকে ‘মানবিক বিপর্যয়’ বলে অভিহিত করেছেন। তিনি জানান, অবরুদ্ধ গাজায় চিকিৎসা সংকট চরমে পৌঁছেছে এবং ১০ হাজারেরও বেশি আহত মানুষকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য সরিয়ে নেওয়া জরুরি।
বিশ্বজুড়ে বাড়ছে ক্ষোভ ও সমালোচনা। সম্প্রতি প্রকাশিত পিউ রিসার্চ সেন্টারের এক জরিপে দেখা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রে ইসরায়েলের প্রতি সমর্থন কমছে। জরিপে অংশগ্রহণকারীদের ৫৩ শতাংশ এখন ইসরায়েলের বিরুদ্ধে নেতিবাচক মনোভাব পোষণ করেন, যেখানে ২০২২ সালে এই হার ছিল ৪২ শতাংশ।
গাজার এই মানবিক বিপর্যয় থামাতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এখন কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানাচ্ছে। তবে তৎপরতা যতই থাকুক, ইসরায়েলের আগ্রাসন আর ফিলিস্তিনিদের মৃত্যু থামছে না।