রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলায় নির্মাণাধীন সেতুর ওপর থেকে লোহার অ্যাঙ্গেল মাথায় পড়ে আসলাম মণ্ডল (৪০) নামে এক স্যালো ইঞ্জিন মিস্ত্রীর মৃত্যু হয়েছে।
বুধবার (১৪ মে) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার কশবামাজাইল ইউনিয়নের নাদুরিয়া ঘাট এলাকায় এ মর্মান্তিক দুর্ঘটনাটি ঘটে।
নিহত আসলাম মণ্ডল পাংশা উপজেলার সাওরাইল ইউনিয়নের বিশই-সাওরাইল গ্রামের করিম মণ্ডলের ছেলে। তিনি পেশায় একজন অভিজ্ঞ ইঞ্জিন মিস্ত্রী ছিলেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নাদুরিয়া ঘাট থেকে মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার লাঙ্গলবাঁধ পর্যন্ত গড়াই নদীর ওপর একটি সেতু নির্মাণের কাজ চলছে, যা বাস্তবায়ন করছে এম.এম. বিল্ডার্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড। কাজটি এলজিইডির অর্থায়নে পরিচালিত হচ্ছে।
বুধবার সকালে ওই নির্মাণ প্রকল্পে ব্যবহৃত একটি স্যালো ইঞ্জিনচালিত জেনারেটরে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দিলে তা মেরামতের জন্য আসলাম মণ্ডলকে আনা হয়। তিনি সেতুর নিচে, মূল কাঠামো থেকে প্রায় ৩০ ফুট দূরে বসে ইঞ্জিন মেরামতের কাজ করছিলেন। এ সময় সেতুর ওপরে কর্মরত শ্রমিকদের হাত ফসকে আনুমানিক তিন ফুট লম্বা একটি লোহার অ্যাঙ্গেল পড়ে সরাসরি আসলামের মাথায় লাগে।
ঘটনার পরপরই সহকর্মীরা তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে পাংশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়। কিন্তু হাসপাতালে পৌঁছানোর কিছুক্ষণের মধ্যেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রজেক্ট ম্যানেজার বিজন কৃষ্ণ বাড়ৈ বলেন, “আমাদের যন্ত্রপাতি মেরামতের দায়িত্বে সবসময় আসলাম মণ্ডল থাকতেন। আজও তিনি যথারীতি কাজ করছিলেন। দুর্ভাগ্যজনকভাবে ওপরে কর্মরত শ্রমিকদের হাত থেকে একটি লোহার অ্যাঙ্গেল পড়ে এই দুর্ঘটনা ঘটে। আমরা তার মৃত্যুতে গভীরভাবে শোকাহত।”
পাংশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অ্যাসিস্টেন্ট তাসফিয়া জেসমিন বলেন, “আসলাম মণ্ডলকে সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটে হাসপাতালে আনা হয়। তার মাথায় গুরুতর আঘাত ছিল, তাই তাকে দ্রুত ঢাকা মেডিকেলে রেফার করা হয়।”
পাংশা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সালাউদ্দিন বলেন, “ঘটনার খবর পেয়ে আমরা খোঁজ নিয়েছি। এটি একটি দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যু বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি। তবে নিহতের পরিবার যদি কোনো অভিযোগ করে, তাহলে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”