নাইজেরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় বোর্নো রাজ্যের মালাম কারান্তি গ্রামে ভয়াবহ সশস্ত্র হামলার ঘটনায় অন্তত ২৩ জন কৃষক ও জেলে নিহত হয়েছেন। স্থানীয় সূত্র ও নিরাপত্তা বাহিনীর তথ্য অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার সকালে সংঘটিত এ হামলায় আরও বহু মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন এবং অনেকে অপহরণের শিকার হয়েছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
সশস্ত্র গোষ্ঠীর সদস্যরা ভোরবেলা গ্রামে প্রবেশ করে সাধারণ মানুষকে জড়ো করে হঠাৎ করে নির্বিচারে গুলি চালায় এবং ধারালো অস্ত্র দিয়ে হামলা চালায়। স্থানীয় বাসিন্দা সানি আউয়াল জানিয়েছেন, নিহতদের অধিকাংশই শিম চাষের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। এক বৃদ্ধ ব্যক্তি, যিনি সৌভাগ্যক্রমে বেঁচে যান, গ্রামবাসীদের পুরো ঘটনার বিবরণ দেন।
প্রত্যক্ষদর্শী উসমান আলী বলেন, “আমরা নিহতদের মরদেহ উদ্ধার করতে গেলে হামলাকারীরা আবার আমাদের ওপর হামলার চেষ্টা করে। তখন আমরা পালাতে বাধ্য হই।”
এই হামলার পেছনে জঙ্গি গোষ্ঠী বোকো হারাম অথবা ইসলামিক স্টেট ওয়েস্ট আফ্রিকা প্রভিন্স (ISWAP)-এর জড়িত থাকার আশঙ্কা করছে নিরাপত্তা বাহিনী। দীর্ঘদিন ধরে এই অঞ্চলে এসব গোষ্ঠী অপহরণ, হত্যাকাণ্ড ও ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছে।
বোর্নো রাজ্যের গভর্নর সম্প্রতি স্বীকার করেছেন, রাজ্যে সন্ত্রাসী তৎপরতা আবারও বাড়ছে এবং নতুন করে অপহরণ ও সহিংসতার ঘটনা ঘটছে, যা নিরাপত্তা বাহিনীর নিয়ন্ত্রণ নিয়ে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে।
হামলার পর পুরো মালাম কারান্তি গ্রামে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। অনেক পরিবার তাদের ঘরবাড়ি ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ের উদ্দেশ্যে পালিয়ে যাচ্ছে। নিরাপত্তা বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছালেও পরিস্থিতি এখনও সম্পূর্ণভাবে নিয়ন্ত্রণে আসেনি।
এখন পর্যন্ত নিহতদের পরিচয় নিশ্চিত করা হয়নি এবং নিখোঁজদের সন্ধানে অভিযান চলছে। নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ধরনের হামলা প্রমাণ করে যে, সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর হুমকি এখনও পুরোপুরি নির্মূল হয়নি এবং সাধারণ মানুষের জীবন এখনো ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।