গাজীপুরের কাপাসিয়ায় বিএনপির একটি মতবিনিময় সভায় প্রতিপক্ষের হামলায় সাংবাদিক, পুলিশ সদস্য ও দলীয় নেতাকর্মীসহ অন্তত ১২ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে যমুনা টিভির চিত্র সাংবাদিক রকি হোসেন গুরুতর অবস্থায় গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

ঘটনাটি ঘটে শনিবার (১৭ মে) দুপুর ২টার দিকে কাপাসিয়া উপজেলার চাঁদপুর ইউনিয়নের চেরাগআলী মোড়ে। বিএনপির একাংশ আয়োজিত সভাটি চলাকালে হঠাৎ করে মোটরসাইকেলযোগে ২০-২৫ জনের একটি দল সেখানে হানা দেয়। প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্যমতে, তারা সভাস্থলে এসে ভাঙচুর চালিয়ে চেয়ার, টেবিল, মাইকসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম নষ্ট করে দেয়। এরপর হামলাকারীরা সাংবাদিকদের লক্ষ্য করে হামলা চালায়। এ সময় ভিডিও ধারণ করছিলেন সাংবাদিক রকি হোসেন। তাকে রাস্তায় ফেলে বেধড়ক মারধর করা হয়। হামলাকারীরা তার ক্যামেরা, মাইক্রোফোন, আইডি কার্ড, লাইভ ডিভাইস ও ল্যাপটপ ছিনিয়ে নেয় বলে অভিযোগ রয়েছে।

রকিকে সহকর্মীরা তাৎক্ষণিকভাবে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তার শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক।

এ বিষয়ে গাজীপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সাখাওয়াত হোসেন সেলিম বলেন, “আমরা পূর্বনির্ধারিতভাবে একটি শান্তিপূর্ণ সভা করছিলাম। সভা শেষে বাইরের একটি গ্রুপ পরিকল্পিতভাবে হামলা চালায়। এ ধরনের ন্যাক্কারজনক ঘটনার আমরা তীব্র নিন্দা জানাই এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি।”

জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক শাহ রিয়াজুল হান্নান বলেন, “ঘটনাটি অনাকাঙ্ক্ষিত। কারা এর পেছনে জড়িত, তা এখনো নিশ্চিত নয়। সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে তদন্ত চলছে। দলের কেউ যদি এর সঙ্গে যুক্ত থাকে, তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে।”

ঘটনার পর গাজীপুর সাংবাদিক মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। গাজীপুর প্রেস ক্লাব, কাপাসিয়া প্রেস ক্লাবসহ বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠন যৌথ বিবৃতিতে সাংবাদিকদের ওপর হামলার প্রতিবাদ জানিয়ে দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছে।

কাপাসিয়া থানার ওসি জয়নাল আবেদীন মন্ডল বলেন, “ঘটনার পরপরই পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে। এখনো হামলাকারীদের শনাক্ত করা যায়নি। তদন্ত চলছে। এখন পর্যন্ত থানায় কোনো লিখিত অভিযোগ জমা পড়েনি।”

ঘটনার ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ এবং জড়িতদের চিহ্নিত করে দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি জানানো হয়েছে বিভিন্ন পক্ষ থেকে।