ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলায় পুলিশের অভিযান থেকে যুবলীগের এক নেতাকে পালিয়ে যেতে সহায়তার অভিযোগ উঠেছে যুবদলের নেতার বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় পুলিশ একটি মামলা দায়ের করেছে এবং বিষয়টি ঘিরে স্থানীয় রাজনীতিতে তীব্র উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে।
ঘটনাটি ঘটেছে গত বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে উপজেলার বুধন্তি বাসস্ট্যান্ড এলাকায়। পুলিশ ওই সময় যুবলীগের বুধন্তি ইউনিয়ন শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সোহাগ ইসলামকে আটক করে। কিন্তু অল্প সময়ের মধ্যেই স্থানীয় যুবদল নেতা ও বুধন্তি ইউনিয়ন যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মিজান মিয়া ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন এবং পুলিশের কাজে বাধা দেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানা যায়, মিজান মিয়া একপর্যায়ে এসআই সুমন চন্দ্র দাসকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেন এবং এর সুযোগে সোহাগ ইসলাম ঘটনাস্থল থেকে দৌঁড়ে পালিয়ে যান। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ৩৩ সেকেন্ডের একটি ভিডিওতেও এই দৃশ্য দেখা যায়, যেখানে মুদিদোকানের ভেতরে পুলিশ, রাজনীতিক ও সাধারণ লোকজনের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে।
ঘটনার পরদিন শনিবার সকালে বিজয়নগর থানার এসআই সুমন চন্দ্র দাস বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। এতে সোহাগ ইসলাম (৩৫), মিজান মিয়া (৪২), কাপ্তান মিয়া (৩০) এবং রোমান খান নামের চারজনকে আসামি করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে।
এদিকে, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে মিজান মিয়াকে শোকজ করেছে জেলা যুবদল। কেন তাঁর বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, সে বিষয়ে ১০ কার্যদিবসের মধ্যে লিখিত ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে সাংবাদিকরা যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে যুবদল নেতা মিজান মিয়া প্রথমে সংযোগ কেটে দেন এবং পরবর্তীতে তাঁর দুটি মোবাইল নম্বরে একাধিকবার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
বিজয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শহীদুল ইসলাম বলেন, “ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক। আইনের চোখে সবাই সমান। আসামিদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে।”
এই ঘটনায় এলাকায় রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় উঠেছে। স্থানীয়রা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছেন।