২০২৪ সালের ৫ আগস্ট বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ঘটে যায় নাটকীয় পটপরিবর্তন। ছাত্র-জনতার ৩৬ দিনের অভ্যুত্থানের মাধ্যমে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতা হারান। এরপর থেকেই বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের কূটনৈতিক সম্পর্ক নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। সম্প্রতি সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া দেওয়াকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা আরও বেড়েছে। এই পরিস্থিতিতে ভারতের সেনাপ্রধান জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী দুই দেশের সম্পর্ক নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করেছেন।
১৩ জানুয়ারি ভারতের সেনাবাহিনীর বার্ষিক সংবাদ সম্মেলনে জেনারেল দ্বিবেদী জানান, বাংলাদেশ ভারতীয় কৌশলগত স্বার্থে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, “আমরা প্রতিবেশী। আমাদের একসঙ্গে কাজ করতে হবে এবং নিজেদের স্বার্থে বৈরিতা নয়, বরং বোঝাপড়ার মাধ্যমে সম্পর্ক এগিয়ে নিতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশের সীমান্তের প্রায় পুরো অংশ ভারতীয় সীমান্তের সঙ্গে সংযুক্ত। এমন কিছু করা উচিত নয় যা দুই দেশের সম্পর্কে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। ঝুঁকি মোকাবিলার ক্ষেত্রে বর্তমানে কোনো দিক থেকেই হুমকি দেখা যায়নি।”
৫ আগস্টের পটপরিবর্তন নিয়ে জেনারেল দ্বিবেদী বলেন, “ওই সময় আমি বাংলাদেশের সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রেখেছিলাম। পরবর্তীতে, গত ২০ নভেম্বরও আমরা একটি ভিডিও কনফারেন্সে অংশ নিয়েছি। আমাদের সামরিক সম্পর্ক এখনও স্বাভাবিক এবং শক্তিশালী রয়েছে।”
বাংলাদেশের সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান সম্প্রতি একটি সাক্ষাৎকারে বলেছেন, “ভারতের সঙ্গে আমাদের ন্যায্যতার ভিত্তিতে সম্পর্ক বজায় রাখতে হবে। জনগণের মধ্যে যেন কোনোভাবেই এমন ধারণা না জন্মায় যে, ভারত বাংলাদেশের ওপর কর্তৃত্ব করছে বা আমাদের স্বার্থের পরিপন্থী কিছু করছে।”
ভারতীয় সেনাপ্রধানের মতে, দুই দেশের সেনাবাহিনীর সম্পর্ক বরাবরই নিখুঁত এবং সহযোগিতামূলক। তিনি জানান, “বর্তমান পরিস্থিতিতে সামরিক সম্পর্ক অত্যন্ত দৃঢ় এবং ভবিষ্যতেও এটি আরও শক্তিশালী হবে।”
এই মন্তব্যগুলো ইঙ্গিত দিচ্ছে যে, ঢাকা-দিল্লি সম্পর্ক ভবিষ্যতে আরও গভীর ও সমঝোতার পথে এগোবে। দুই দেশের মধ্যে পারস্পরিক বোঝাপড়া এবং সহযোগিতা কৌশলগত উন্নয়ন নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।